পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করুন এই ১৬ টি উপায়ে
ছাত্রজীবনে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করাটা যুগ যুগ ধরে চলে আসলেও এর মধ্যে কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। যেমন ১০ বছর আগেও যদি কাওকে বলা হত পড়াশোনার পাশাপাশি আয় বলতে কি বুঝানো হতো। অধিকাংশের উত্তর হতো টিউশনি বা শিক্ষার্থীকে পাঠদান দেওয়া। কিন্ত আজ ১০ বছর পর নানান রকমের আয়ের উৎস রয়েছে, যা অনেকে করছে। কিন্তু আবার অনেকেই হয়ত জানে না উপায় গুলো কী কী! তাই আজ নিয়ে এসেছি ১৬ টি আয়ের উপায় যেগুলো কিনা একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি করতে পারবে। তাই দেরী না করে দেখে নিন।
১.ফ্রীলান্সিং
শুধু বহির্বিশ্বেই নয় বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্রীলান্সিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বেশ কয়েকটি বিষয়ে একজন শিক্ষার্থী ফ্রীলান্সিং করতে পারে। এর জন্য শুধু দরকার হয় আপনি কোন বিষয়ে আগ্রহী এবং সেই বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করা। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার অভিজ্ঞতা যদি আশানুরুপ হয় তাহলে মাসে ২০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় কতে পারবেন। ঘরে বসে আয় করার এই মাধ্যমটি দিন দিন জনপ্রিয় এবং প্রতিযোগিতা মুলক হয়ে উঠছে। তাই দেরী না করে আজ থেকেই ফ্রীলান্সিং শুরু করার পরামর্শ দিচ্ছি।
২.ভার্চুয়াল সহকারী
রহিম একটি ব্যবসা শুরু করছে। কিন্তু আশানুরুপ লাভ পাচ্ছে না। কেননা সে একা একা তার ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে পারছে না। তা সে একজন সহকারী খুজছে। কিন্তু তার অফিসটি বড় না হওয়ায় সে ভার্চুয়াল সহকারী নিতে চায়। এইভাবেই মুলত কাজ করে ভার্চুয়াল সহকারী। চাইলে আপনিও একজ ভার্চ্যাল সহকারী হিসেবে কাজ করতে পারেন এবং ঘরে বসেই আয় করতে পারেন। এতে করে আপনার অভিজ্ঞতাও বাড়বে। যার ফলে আপনিও ভবিষ্যৎ এ গিয়ে এই বিষয়ে একটি ফার্ম গঠন করতে পারবেন এবং অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবেন।
৩.হোম টিউশন
আপনি ছাত্র হলে আবশ্যই কোনো না কোনো বিষয়ে পারদর্শী হবেন। আপনি যদি চান এই বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে আপনি কাউকে পড়াতে পারবেন তাহলে আজ থেকেই শুরু করে দিতে পারেন টিউশনি। আপনি শিক্ষার্থীর বাসায় গিয়ে পড়াতে পারেন। এই পদ্ধতিটি সনাতন পদ্ধতি, কেন আদি থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি আয়ের উৎস হিসেবে এই পদ্ধতিকে বেছে নিচ্ছে। নির্দিষ্ট সময় পড়িয়ে আপনি বেশ ভালো টাকা আয় করতে পারবেন।
৪.অনলাইন টিউশন
আপনি যদি বাসায় গিয়ে পড়াতে ইতস্তত বোধ করেন তবে এই পদ্ধতিটি আপনার জন্য। ছাত্র-ছাত্রীদের অনলাইনে পড়িয়েও আপনি বেশ ভালো আয় করতে পারবেন। ডিজিটাল এই সময়ে এসে আপনার এই পদযাত্রা হতে পারে বেশ সুদূরপ্রসারী।
৫. ভিডিও ব্লগিং
আমাদের মধ্যে অনেকেই নানান বিষয়ে পারদর্শী। নিজেদের এই প্রতিভাবে কাজে লাগিয়ে আয় করা যায় বেশ ভালোভাবে। ধরুন আপনি ভালো রান্না করতে পারেন। অথবা আপনি একটা রেসিপি খুব ভালোভাবে রান্না করতে পারেন কিন্তু একজন বিভিন্ন উপকরনের অভাবে সঠিকভাবে সেই রেসিপিটি রান্না করতে পারে না। আপনি চাইলে আপনার রেসিপিটি তৈরী করে ভিডিও বানিয়ে ইউটিউব সহ নানা প্লাটফর্মে আপলোড করতে পারেন। এতে করে আপনার পরিচিতি বাড়বে এবং আয়ের একটি চমৎকার উৎস পেয়ে যাবেন। আমি শুধু একটি উদাহরন দিয়েছি। এই রকম আরো অনেক বিষয় আছে যেগুলো নিয়ে আপনি ভিডিও ব্লগিং শুরু করতে পারেন। উদাহরনস্বরুপ জীববিজ্ঞান, গণিত, অংকন, হস্তশিল্প, বাগান করা, বাদ্যযন্ত্র বাজানো সহ আরো অনেক বিষয় রয়েছে।
৬.ব্লগিং
আপনি যদি ক্যামেরার সামনে আসতে না চান তবে ব্লগিং হতে পারে আপনার আয়ের একটি ভালো উৎস। এই ক্ষেত্রেও আপনি যেই বিষয়ে পারদর্শী সেই বিষয় নিয়ে লেখালেখি করতে পারেন। সম্পূর্ন বিনামুল্যে আপনি ব্লগিং শুরু করতে পারেন। ব্লগিং করার জন্য দুটি জনপ্রিয় সাইট হল “Blogger.com” এবং “WordPress.com“। ভালো এবং ইউনিক কন্টেন্ট লিখলে খুব তাড়াতাড়ি আপনার ব্লগার জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
৭.ইন্টার্ণশীপ
বর্তমানে ইন্টার্ণশীপ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বড় বড় কোম্পানি গুলো তাদের বিভিন্ন ওয়ার্কশপের জন্য শিক্ষার্থীদের ইন্টার্ণশীপ দিয়ে থাকে। ইন্টার্ণশীপ গুলো বিভিন্ন বিষয়ের উপর হয়ে থাকে। যার মধ্যে অ্যাকাউন্টেন্সি, ডিজাইনিং, ডিজিটাল মার্কেটিং এবং সেলস অন্যতম। স্বল্পকালীন এসব ইন্টার্ণশীপে আয়ের পাশাপাশি জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতাও অর্জন করা যায়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ইন্টার্ণশীপে যোগ দেয়ার পরামর্শ রইল।
৮.অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
একটি ফেসবুক বা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজনেজ পেইজ তৈরী করে বিভিন্ন প্রোডাক্ট বিক্রি করে আফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে খুব সজেই ভালো অংকের টাকা আয় করা যায়। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে আপনার নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও আফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন। আপনি একজন যথাক্রমে ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল এবং ফিনান্স নিয়ে পড়লে যথাক্রমে সফটওয়ার, স্বাস্থ্য সামগ্রী এবং ফিনেন্সিয়াল প্রোডাক্ট নিয়ে আফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন।
৯.গুগোল এড
আপনি যদি একজন এড বা বিজ্ঞাপন ক্রিয়াটর হোন তাহলে আপনি গুগোল এড ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনি আপনার ক্লাইন্টদের আরোও খুশি করতে পারেন কেননা গুগোলের সার্টিফাইড এই এড ম্যানেজারটি খুবই রেসপন্সিভ।
১০.ফেসবুক বিজনেজ এক্সপার্ট
ফেসবুক বিজনেজ এক্সপার্ট হওয়ার অনেক লাভ আছে। কেননা সোশ্যাল মিডিয়া হিসেবে ফেসবুকে রয়েছে বিশাল পাবলিক ফিগার। তাই আপনি যদি একটি নির্দিষ্ট পাবলিককে টার্গেট করে বিভিন্ন একটিভিটি করতে পারেন তাহলে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনদাতারা আপনার প্রতি আরও বিশ্বস্ত হবে। এতে আপনার আয়ের উপরও বেশ প্রভাব পড়বে।
১১.ভিডিও মার্কেটিং
আপনার প্যাশন যদি হয়ে থাকে ভিডিও করা কিংবা ভিডিও নিয়ে জল্পনা কল্পনা থাকলে আজিই ভিডিও মার্কেটিং শুরু করে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিও বানিয়ে আয় করতে পারেন। আপনি চাইলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভিডিও সার্ভিস দিতে পারেন এবং ভালো মানের অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এছাড়াও বিজ্ঞাপনের ভিডিও বানিয়েও টাকা উপার্জন করতে পারেন। ভিডিও এর সাথে সাথে আপনি চাইলে ফটোগ্রাফীও করতে পারেন।
১২.ট্রান্সলেশন সার্ভিস
আপনি যদি আপনার স্থানীয় ভাষা ছাড়া অন্যান্য ভাষা জেনে থাকেন তাহলে আপনি ট্রান্সলেশন সার্ভিস দিতে পারে। এমন অনেক কোম্পানি আছে যেগুলো তাদের মার্কেটিং পারপাসে অন্যান্য ভাষায় তাদের সার্ভিস দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে তারা নানা বহুভাষিক মানুষকে খুঁজে থাকে। এক্ষেত্রে আপনি সেসব কোম্পানিগুলোকে ট্রান্সলেশন সার্ভিসটি দিতে পারেন এবং ভালো আয় করতে পারেন।
১৩.নেটওয়ার্ক মার্কেটিং
আপনি আপনার স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ অংশ নিতে পারেন। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর ফলে আপনার বেশ কয়েকটি বিষয়ে জড়তা কেটে যাবে। যার মধ্যে অন্যতম হল কমিউনিকেশন। কমিউনিকেশন ডেভেলপমেন্ট কটা গুরত্বপূর্ণ তা আপনাকে আর নাই বললাম। এছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয়ে আপনাকে পারদর্শী করে তুলবে।
১৪.রিসেলার
আপনার যদি পণ্য স্টোরেজের জায়গা না থাকে তাহলে আপনি হয়ত চিন্তা করতে পারেন যে পণ্য কিনে তা বিক্রি করবেন কিভাবে? এজন্য রয়েছে ড্রপ্সহিপিং বিজনেজ বা রিসেলিং। অর্থাৎ আপনি চাইলে হোলসেলার থেকে পণ্য কিনে সরাসরি আপনার কাস্টমারের নিকট বিক্রি করতে পারেন। এতে করে আপনার পনয় সরবরাহের ঝামেলা কমে যাবে। আর নিশ্চিন্ত উপার্জনও করতে পারবেন।
১৫.অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
ডিজিটাল এই যুগে এসে প্রত্যেকের হাতে একটি স্মার্টফোন থাকাটা খুবই দরকার। আর লাইফ সিম্পল করার জন্য এবং স্মার্টফোন চালানোর এক্সপেরিয়ান্সকে আরও সহজ করার জন্য অ্যা।প এর বিকল্প নেই। তাই প্রায় প্রতিটি কোম্পানিরই দিন দিন অ্যাপ এর চাহিদা বেড়ে চলেছে। আপনি অ্যাপ ডেভেলপার হিসেবে ভালো সার্ভিস দিয়ে আপনার আয়কে নিয়ে যান কয়েক ধাপ এগিয়ে।
১৬.ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
বর্তমানে একটি কোম্পানি তৈরী করার সাথে সাথে দরকার পরে একটি ওয়েবসাইটের। ওয়েব ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে আপনি এসব কোম্পানিদের সার্ভিস দিতে পারেন। কিছু কোর্স করে আপনি সহজেই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে পারেন। শুধু দেশেই নয় ফ্রীলান্সিং এর মাধ্যমে দেশের বাইরেও আপনার সার্ভিস দিতে পারবেন।
এই ১৬ টি উপায়ে আপনি আপনার ছাত্র জীবনে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করতে পারবেন বলে আমি আশা করছি। তবে এই উপায়গুলোর বাইরে যদি আরও উপায় আপনার জানা থাকে তবে কমেন্টে জানান।
very good writing…
Thank You so much. Stay with Tech Bhandar
It is a pity, that now I can not express – I hurry up on job. I will be released – I will necessarily express the opinion on this question.
zeenite
I regret, that I can not participate in discussion now. It is not enough information. But with pleasure I will watch this theme.