স্মার্টফোনের জন্য ক্ষতিকারক ৬ টি অ্যাপ্লিকেশন
নিত্য দিনের এই জীবনে আমরা আমাদের স্মার্টফোনে নানা অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই জানি না যে কোন এপ্স গুলো ভালো এবং কোন অ্যাপ গুলো ভালো নয়। আজকাল কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে যাচ্ছে যা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। জ্বী সত্যিই বিভিন্ন এপ্স এর কারনেই এসব ঘটনা ঘটছে। স্বাভাবিক ভাবেই আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কোন এপ্লিকেশন গুলো এত বিপজ্জ্বনক। তাই আজ আমি এসে গেছি এমন ৬ টি অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে যেগুলো আপনার কখোনই ব্যবহার করা উচিত নয়। তাই মনোযোগ দিয়ে দেখুনঃ
১.ক্লিনিং অ্যাপ
আজকাল সবাই নিজের মোবাইল শুধু ফাস্ট না সুপার ফাস্ট চায়। মোবাইলের কর্মদক্ষতা বাড়ানোর জন্য নানান এপ্স আমরা ডাউনলোড করি। কিন্ত কখনো কি চিন্তা করে দেখেছেন যে মোবাইলের কর্মদক্ষতা যদি প্রয়োজনের তুলনায় বাড়াতেই হয় তাহলে তো মোবাইল কোম্পানিই তা প্রদান করে থাকত। কিন্তু কোম্পানি থেকে কোনো এপ্স দেওয়া হয়না যেগুলো কিনা আপনার মোবাইলের কর্মদক্ষতা বাড়াবে। কারন মোবাইলে বিল্ট ইন কিছু প্রোগ্রাম করা থাকে যা কিনা আপনার মোবাইলের কর্মদক্ষতাকে সবসময়ই স্থিতিশীল রাখে।
২.ঝুকিপূর্ণ ব্রাউজার
এখানে ঝুকিপূর্ণ ব্রাউজার বলতে এমন ব্রাউজারের কথা বলা হয়েছে যেগুলো আপনার তথ্য গোপন রাখে না। এমন ব্রাউজারের নাম বললে প্রথমেই এসে পড়ে ইউ সি ব্রাউজারের নাম। এই চাইনিজ এপ্লিকেশনটি গ্রাহকদের তথ্য গোপন রাখে না বলে জানা গেছে। আপনি যে বিষয় নিয়ে এই ব্রাউজারটিতে সার্চ করবেন কিছুদিন পর দেখবেন ঐ বিষয়ে এডভারটাইজমেন্ট আপনার কাছে আসতে থাকবে। তাই এসব ঝুকিপুর্ণ ব্রাউজার এড়িয়ে চলুন।
৩.সাজেস্টেড অ্যাপ্লিকেশন
আপনি ইউটিউবে কোনো একটি অ্যাপ এর রিভিউ দেখলেন। তারপর সেই ভিডিউ কোনো একটি অংশে সেই অ্যাপটির ডাউনলোড লিংক থেকে আপনি ডাউনলোড করলেন। কিন্তু আপনি কি জানেন এই অ্যাপটি আপনার বিশাল ক্ষতির কারন হতে পারে। সাধারনত গুগোল প্লে-স্টোর এবং অ্যাপ স্টোরে যে অ্যাপ গুলো থাকে সেগুলো সার্টিফাইড হয়ে থাকে। তাই এসব ভেরিফাইড স্টোর থেকে আপনি নিশ্চিন্তে অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারবেন। অন্যদিকে সাজেস্টেড অ্যাপ গুলো আপনার মোবাইলে থাকা বিভিন্ন তথ্য এমনকি ব্যাংকিং লেন্দেন পর্যন্ত চুরি করতে পারে।
৪. এন্টি ভাইরাস সফটওয়ার
কোনো ডিভাইসকে ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য এন্টি ভাইরাস দেওয়া হয়। মুলত এন্টি ভাইরাস গুলো বেশিরভাগ কম্পিউটারে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বেশ কিছু বছর যাবত মোবাইলে এন্টি ভাইরাসের ব্যবহার বেড়ে গিয়েছে। আপনি হয়ত জানেন না আসলেই জানেন না যেসব এন্টি ভাইরাসের অ্যাপ গুলো আপনি ব্যবহার করছেন সেগুলোর বেশির ভাগই স্পাম বা সোজা বাংলায় যাকে বলা হয় ভুয়া। আপনার অজান্তেই সেসব অ্যাপ গুলো আপনার মোবাইলের বিভিন্ন সিকিউরিটি এক্সেস করে। আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না হ্যাকিং এর ফাদে পড়তে। তাই এসব অ্যাপ গুলো ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। অহ আরেকটি কথা বলতে ভুলে গিয়েছি, এসব এন্টি ভাইরাস অ্যাপগুলো মোবাইলের ব্যাটারি দ্রুত ড্রেন করে এবং ঘন ঘন এড দেখায়।
৫.র্যাম/রোম ইঙ্ক্রিয়েজার
কি বলব ভাই, এখন নাকি মোবাইলের র্যাম বা রোম কাস্টমভাবে বাড়ানো যায়। মেনে নিচ্ছি যে আমাদের মধ্যে সবারই ইচ্ছা থাকে মোবাইলের র্যাম কিংবা রোম যদি বাড়াতে পারতাম তাহলে হাতের মোবাইলটি সুপার ফাস্ট হয়ে যেত। কিন্তু এইটা কি বাস্তব যে আপনি সফটওয়ার দিয়ে মোবাইলের হার্ডওয়ার বাড়াতে পারবেন?? আপনার মতামত কমেন্টে জানান কমেন্টে। তবে আমার কাছে তা সম্পূর্ণ অবাস্তব। তাহলে সবার মনে একটা প্রশ্ন থাকতে পারে যে যদি কাজের কাজই না করে তাহলে অ্যাপ গুলো করেটা কি? আমি বলছি শুনুন, অ্যাপগুলো আপনার ফোনের বিভিন্ন এক্সেস নিয়ে নেয়। এর সাথে আপনার ফোনের পারফর্মেন্স দিন দিন ড্রপ আউট করবে। তাই ভেবে বুঝে এসব অ্যাপ ইন্সটল করবেন।
৬.ফাস্ট চার্জিং অ্যাপ্লিকেশন
মোবাইলের সাথে সাথে ব্যাটারিও দিন দিন আপগ্রেড হচ্ছে। বেশিরভাগ মোবাইলে ব্যবহার করা হচ্ছে ৫০০০ মিলি এম্পিয়ার পর্যন্ত বিশাল ব্যাটারি। স্বাভাবিক ভাবেই এসব ব্যাটারি অনেক্ষন ব্যাকাপ দিবে। যেটা আমাদের কাছে খুবই ভালো লাগে। বিন্তু দুশ্চিন্তা হানা দেয় যখন শুনেন এসব ব্যাটারী চার্জ দেওয়ার জন্য আপনার মোবাইলটি ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে না কিংবা বক্সে ফাস্ট চার্জার দেওয়া থাকে না। তখন আপনি মরিয়া হয়ে উঠেন বিভিন্ন অ্যাপ এর মাধ্যমে স্লো চার্জ থেকে ফাস্ট চার্জে রুপান্তর করতে। কিন্তু আপনি কি কখনো ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখেছেন যে একটি সফটওয়ার কিভাবে হার্ডওয়ারকে তরান্বিত করবে? এসব ফাস্ট চার্জিং অ্যাপ গুলো চার্জিং এ কোনো প্রভাব তো ফেলেই না বরং আপনার মোবাইলকে স্লো করে দেয়। তাই এসব অ্যাপ গুলো ব্যবহার থেকে ১০০ হাত দূরে থাকুন!!
সতর্কতাঃ এই সতর্কতাটি সকল অ্যাপের জন্য প্রযোজ্য। আপনি যে অ্যাপই ইনস্টল করেন না কেন অবশ্যই দেখে নিবেন যে অ্যাপটি কি কি পারমিশন চাচ্ছে। সেনসিটিভ পারমিশন গুলো ভালোভাবে দেখে নিবেন।
*উপরের সকল নির্দেশনা সমুহ মানা বা না মানা সম্পূর্ণ যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। টেক ভান্ডার কখনোই এসব নির্দেশনা গুলোকে মেনে চলার জন্য চাপ প্রয়োগ করে না। তাই কোনো টেকনিক্যাল অথবা ফিসিক্যাল সমস্যার জন্য TechBhandar দায়ী থাকবে না।