অনেক সময় দেখা যায় যে অনেক রিভিউ দেখে এবং অনেক চেক করে আমরা বাজার থেকে মোবাইল কিনে বাসায় এনে দেখি যে মনমতো পারফর্মেন্স দিচ্ছে না। অর্থাৎ আমরা যেমন পারফর্মেন্স চাচ্ছিলাম সেরকম পারফর্মেন্স দিচ্ছে না। তার কারণ কী? অনেক কারণ ই রয়েছে তবে সবগুলোর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো র্যাম। আমরা জানি যে বাজারে ২ জিবি, ৩ জিবি, ৪ জিবি থেকে শুরু করে এখন তো ১২ জিবি র্যামের মোবাইলও পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু আমরা নিজেরাই জানি না যে আমাদের জন্য আসলে কত জিবির স্মার্টফোন প্রয়োজন। তাই আজকের টপিক হচ্ছে কত জিবির স্মার্টফোন আপনার জন্য প্রয়োজন। আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়লে আপনি বাজারে গিয়ে আপনার জন্য একটি পারফেক্ট র্যামের স্মার্টফোন কিনতে পারবেন। তাই অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টকেলটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
র্যাম কী?(What is RAM?)
প্রথমেই জেনে নিই যে র্যাম কী এবং র্যাম কিভাবে কাজ করে। র্যাম হল র্যান্ডম এক্সেস মেমোরি (Random Access Memory)। যদি সংক্ষেপে বুঝাই তাহলে র্যাম হল টেম্পরারি বা অস্থায়ী স্টোরেজ, অর্থাৎ আপনি যখন কোনো অ্যাপ ব্রাউজ করেন তখন সেই অ্যাপ র্যামে স্টোর হয় যাতে আপনি অ্যাপকে খুব ফাস্ট ব্রাউজ করতে পারেন। আপনি যতক্ষণ পর্যন্ত অ্যাপ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ না করবেন ততক্ষণ পর্যন্ত সেই অ্যাপ র্যামে স্টোর থাকবে।
র্যামের বিবর্তন(The evolution of ram)
আপনি যদি স্মার্টফোনের ইন্ড্রাষ্ট্রির দিকে লক্ষ্য রাখেন তাহলে দেখবেন যে আগে কিন্তু এখনকার মতো এত বেশি জিবির র্যাম ছিল না। এত বেশি তো দূরের কথা জিবির হিসাবই ছিল না। তখনকার সময় র্যাম ছিল ১২৮ মেগাবাইট, ৫১২ মেগাবাইট এবং সর্বোচ্চ গেলে ১ জিবি পর্যন্ত যার মাত্রা ছিল। এর একমাত্র কারণ ছিল মোবাইল অ্যাপ গুলো। আগের অ্যাপ গুলো খুবই লাইট বা ছোট সাইজের ছিল। কিন্তু এখনকার সময় টেকনলোজি অনেকদূর এগিয়ে গেছে, আপডেট হয়েছে তাই অ্যাপ গুলোতেও নতুনত্ব এসেছে। যার ফলে অ্যাপ গুলোতে এসেছে আমুল পরিবর্তন এবং অ্যাপের সাইজও বেশ বড় হয়ে গেছে। এখন সাধারণ অ্যাপের সাইজই হয় ৫০-১০০ মেগাবাইটের। আর গেইমিং অ্যাপ গুলো ৫০০ মেগাবাইট থেকে ৩/৪ জিবি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এখনকার মোবাইল গুলোতে ৪ জিবি র্যাম স্ট্যান্ডার্ড দেখা যায় তাই কোম্পানি গুলো মোবাইল গুলোতে ৪জিবি দিয়ে মোবাইল গুলো লঞ্চ করছে।
আপনি কত জিবি র্যামের মোবাইল নিবেন?(How much GB of RAM will you take?)
আপনি যদি সোশাল মিডিয়া নিয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকেন অর্থাৎ আপনি যদি ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম এবং মাঝে মাঝে ইউটিউবে ভিডিও দেখেন তাহলে আপনি ৪ জিবি র্যামের মোবাইল নিতে পারেন। আপনি যদি হেবি বা খুব ভালো মানের গেইম না গেলেন তাহলেও ৪ জিবি র্যামই আপনার জন্য যথেষ্ট। কারণ ৪ জিবি র্যাম দিয়ে আপনি এই কাজ গুলো অনায়াসেই করতে পারবেন। কিন্তু আপনি এসব হালকা মানের গেইম থেকে ভালো মানের গেইমে কনভার্ট করবেন বা শিফট করবেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই কমপক্ষে ৬ জিবি র্যামের মোবাইল নিতে হবে। এতে করে স্মুথলি এবং খুব শান্তিতে গেইম খেলতে পারবেন। অন্যদিকে আপনি এর চেয়েও বড় গেইম খেলবেন এবং খুব ভালো পারফর্মেন্স চাচ্ছেন তাহলে ভালো প্রসেসর এর সাথে ৮ জিবি র্যামের মোবাইল নিতে পারেন। কারন ৮ জিবি র্যাম হলে আপনি ওভারওল একটি ভালো পারফর্মেন্স পাবেন। এখানে গেইম দিয়ে বুঝানোর মূল কারন হলো যে মোবাইলটি কি পরিমান প্রেসার বা চাপ নিতে পারে তা একমাত্র গেইম দিয়েই বুঝানো যায়। আপনি যদি একটি মোবাইলকে ভালো প্রেসার দিয়ে ভালো সার্ভিস পেতে চান তাহলে র্যামের সাথে সাথে অবশ্যই প্রসেসর এবং মোবাইলের স্টোরেজ টাইপও ভালো হতে হবে। আর আপনি যদি এখন মোবাইল বিনতে যান তাহলে আপনি দেখে নিবেন যে আপনার র্যাম টাইপ যেন LPDDR4x হয়ে থাকে। এই টাইপের চেয়ে কম টাইপের র্যাম নিলেও হোক সেটা ৪জিবি বা ৬জিবি আপনি ভালো পারফর্মেন্স পাবেন না।
আশা করি সবাইকে বুঝাতে পেরেছি। এর পরেও আপনার র্যাম বিষয়ক কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। সবাইকে এতক্ষন ধরে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।